মাশরুম চাষের সঠিক পদ্ধতি
বর্তমানে বেকার যুবক যুবতী দের কর্মসংস্থান একটা বড়ো চ্যালেঞ্জর বিষয়। তাই বেকারত্ব যেন একটা অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান যুবক যুবতীদের মধ্যে। তাই বলে চুপ করে বসে থাকলে তো আর দিন চলবে না। কিছু একটা করে ইনকাম করাটা বড়ো অবশ্যক।
তাই যারা চাকুরী করছেন, বা বেকার, স্বনির্ভর হতে চাইছেন, আজ আমি তাদের একটা নতুন ইনকামের পথের দিশা দেখাবো।
যেখানে মাসে ১৫/২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আমি মাশরুম চাষের কথা আজ বলবো, যেটা চাষ করা খুব সহজ আর যে কেউ এটি করতে পারে।
উপকরণ :
একটি মাশরুম রাখার জায়গা, সাঁটস্যাঁতে জায়গা নির্বাচন করতে হবে।
পুরানো ধানের খর, বাভিস্টিন পাউডার, মাশরুম বীজ, আর প্লাস্টিক প্যাকেট।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ চাষ করার কথা বলব, অবৈজ্ঞানিকভাবে চাষ করলে তাতে সেরকম লাভ পাওয়া যায় না। আসুন জেনে নিই তার বিস্তারিত বিবরণ। মাশরুম চাষ শীতের শুরুতে সব থেকে ভালো হয়। বিস্তারিত বিবরণ নিচে দেওয়া হল।
মাশরুম চাষ একটি লাভজনক এবং দ্রুত আয়কারী চাষাবাদ পদ্ধতি। নিচে মাশরুম চাষের সঠিক পদ্ধতি ও সম্ভাব্য মাসিক আয়ের বিশদ দেওয়া হলো:
মাশরুম চাষের সঠিক পদ্ধতি
1. প্রজাতি নির্বাচন
সাধারণত মাশরুমের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ,অয়েস্টার,বাটন মাশরুম, এবং মিল্কি মাশরুম চাষ করা হয়। শুরুর জন্য অয়েস্টার মাশরুম জনপ্রিয় এবং সহজ।
2. সাবস্ট্রেট প্রস্তুতি :
মাশরুম চাষের জন্য সাবস্ট্রেট (যেখানে মাশরুম জন্মায়) প্রস্তুত করতে হবে। সাধারণত পাটখড়ি, ধানের খড়,গমের খড়,কাঠের গুঁড়ো,ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
সাবস্ট্রেট ২-৩ দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে, তারপর পেস্টুরাইজেশন বা স্টেরিলাইজেশন প্রক্রিয়া মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
3. স্পনের (বীজ) সংস্থান:
ভালো মানের মাশরুম স্পন (বীজ) স্থানীয় কৃষি বা সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে।
4. চাষ পদ্ধতি:
সাবস্ট্রেটে স্পন ছিটিয়ে প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে রাখতে হবে।
ব্যাগগুলো এমন স্থানে রাখতে হবে যেখানে সূর্যালোক সরাসরি প্রবেশ করে না এবং তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রিত থাকে।
মাশরুম চাষের উপযুক্ত তাপমাত্রা ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং আর্দ্রতা ৮০-৯০% হতে হবে।
5. বৃদ্ধি ও ফসল সংগ্রহ:
১৫-২০ দিনের মধ্যে স্পন থেকে মাশরুম বের হতে শুরু করবে।
১-২ সপ্তাহ পর মাশরুম পূর্ণ বৃদ্ধি পাবে এবং এটি সংগ্রহ করা যাবে।
মাশরুম চাষের সম্ভাব্য মাসিক আয়
মাশরুম চাষের আয় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, যেমন চাষের পরিমাণ, বাজারে দাম, এবং প্রজাতির চাহিদা উপর।
1. শুরুর বিনিয়োগ:
একর প্রতি মাশরুম চাষের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ২/৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। প্রথমে অল্প টাকা দিয়ে শুরু করুন। ২০ থেকে ২৫ প্যাকেট দিয়ে শুরু করুন।
2. আয়:
মাশরুমের বাজার মূল্য সাধারণত ১৫০-৩০০ টাকা প্রতি কেজি হয়ে থাকে।
এক মাসে ১০০-২০০ কেজি মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব।
এতে মাসে আনুমানিক ১৫,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা আয় হতে পারে।
মাশরুম চাষ লাভজনক হতে পারে যদি সঠিক পদ্ধতি মেনে চলে এবং স্থানীয় বাজারে এর সঠিক বিক্রয় ব্যবস্থা থাকে।